রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ অপরাহ্ন
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ এমরান মিয়া (২০) নামের এক বখাটে যুবকের অত্যক্তে স্কুল যাওয়া বন্ধ রয়েছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার এক ছাত্রীর। ওই যুবকের বিভিন্ন ধরনের উত্যক্ত ও হুমকির ভয়ে প্রায় দেড় মাস ধরে স্কল যেতে পারছে না ছাত্রীটি। ফলে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউএনও’র কাছে অভিযোগ ও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার বড় জামালপুর গ্রামের ওই মেয়েটি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর গ্রামস্থ নানার বাড়িতে বসবাস করে আসে। সেখান থেকে পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখা-পড়া করে আসছিলো সে। ছাত্রীটি স্কলে যাওয়ার আসার সময় এমরান মিয়া তাকে পথরোধ করে প্রেম-ভালবাসা ও কু-প্রস্তাব দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের উত্যক্ত করে আসে। এমরানের এসব প্রস্তাবে সারা না দেওয়ায় প্রায়ই অপহরণের হুমকির শিকার হয় ওই ছাত্রী। এমতাবস্থায় চরম আতঙ্কিত হয়ে উঠে ছাত্রী ও তার পরিবার।
এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে ছাত্রীর পিতা-মাতা ও স্বজনরা ওই যুবকের অভিভাককে অবগত করান। এতে এমরান মিয়া এবং তার পরিবারের লোকজন ১৪ জুন সন্ধ্যায় ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটির মা ও মামাকে মারপিট করে এবং ছাত্রীকে অপরহরণ করা হুমকি দেয়। এ ঘটনায় মেয়ের পিতা বাদি হয়ে ১৫ জুন পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
বুধবার (৩ জুলাই) সকালে মেয়েটির পিতা অভিযোগ করে বলেন, এসব ঘটনার আতঙ্কে আমার মেয়ের প্রায় দেড় মাস যাবত স্কুল যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এদিকে ইউএনও’র নিকট অভিযোগ করায় ছেলের লোকজন সব সময়ই হুমকি দিয়ে আসছে। এমন কি মোবাইল ফোনে নানা ধরণের কথাবার্তা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, ধারাবাহীকতায় ছাত্রীর শুরু হয় অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষা ২২ জুন গনিত বিষয়ে অংশ নিলে আবারও হুমিকর সম্মুখিত হতে হয়। তথাপিও ২৩ জুন ইংরেজি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় ছাত্রীটির শারিরীক অসুস্থবোধ হয়। পরে ওষুধ নেওয়ার জন্য স্কল গেইটের রাস্তায় বেরুলে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা এমরানের পিতা রুহুল আমিন ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে খোঁজা-খুঁজির পর জানা যায় যে, মেয়েকে এমরানের বাড়িতে গৃহবন্দি করে রেখেছে। এমতাবস্থায় স্বজনরা ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ফলে ছাত্রীর অবশিষ্ঠ পরীক্ষায় অংশ নেয়া বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মেয়ের মা বাদি হয়ে ২৬ জুন পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এমরানকে মূল আসামি করে প্ররোচনাকারী আরো ৩ জনকে আসামি করা হয়।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) টিএমএ মমিন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেশ চন্দ্র বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির মা একটি এজাহার দাখিল করেছেন। যা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।